প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর সম্পদে ঘেরা সিলেটের সীমান্তবর্তী দর্শনীয় স্থান জাফলং। দেশের অন্যতম স্বীকৃত প্রাকৃতিক স্থানে পরিণত হওয়া জাফলং গত ৯মাস ধরে বালু- পাথর লুটের অশনি সংকেতে ভুগছে। গত ৯ মাসে যেভাবে এই অঞ্চলে অবৈধভাবে বালু- পাথর উত্তোলন হচ্ছে, তা স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা সময়ে সময়ে প্রতিবাদ জানালেও প্রশাসন নির্বিকার! যা উপজেলাবাসীকে হতাশ করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ী ও মাফিয়া গ্রুপ দিনে-রাতে অবাধে পাথর উত্তোলন করছে। একদিকে নদী তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারাচ্ছে, অন্যদিকে বন্যার আশঙ্কা ক্রমে বাড়ছে। নদীর পাড় ভেঙে পড়ার ঝুঁকিও বাড়ছে । এ বিষয়ে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও সেখান থেকে কোন কার্যকরী নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।প্রশাসন কর্তৃক প্রহসনমূলক অভিযান পরিচালনার নমুনা পাওয়া গেছে, যা উপজেলার সচেতন মহলকে হতাশ করেছে ।
স্থানীয় পরিবেশবিদরা জানান, অবৈধ পাথর উত্তোলন পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হচ্ছে, যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য উন্নতিতে বাধা সৃষ্টি করছে। প্রশাসন যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তবে ভবিষ্যতে জাফলংয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন হতে পারে।
বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সচেতন মহল প্রতিবাদ জানালে তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকিসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া যায়।
এদিকে, স্থানীয় জনগণ অভিযোগ করেন যে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাথর মাফিয়াদের সাথে যোগসূত্র রয়েছে। ফলে তারা আইন প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছে এবং নির্বিঘ্নে বালু-পাথর লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রাম পুলিশের সদস্যদেরও অনেক সময় এই অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের নামে ট্যাক্স আদায়ের বৈধতা দেখে জনমনে নানান প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। সর্বসাকুল্যে প্রশাসনের নিরব ভূমিকাই দায়ী বলে মনে করছেন সাধারণ জনগণ।
জাফলংয়ের পরিবেশ রক্ষা এবং ইতিহাস সংরক্ষণে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জনসচেতনতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং প্রতিটি পর্যায়ে তাদের কার্যক্রমকে স্বচ্ছ রাখতে হবে। আশা করা হচ্ছে, প্রশাসন শীঘ্রই এই পরিস্থিতির দিকে নজর দেবে এবং জাফলংয়ের পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।